গ্রামের নাম কমলা দিঘী। শান্ত, পরিপাটি ও আনন্দমুখর পরিবেশ। হঠাৎ একদিন বিকট শব্দে আঁতকে ওঠে গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে মুখোশধারী কিছু লোক চলে যায় বুটের শব্দের আওয়াজ তুলে। ছিন্ন-ভিন্ন গ্রামের এক কুটির থেকে একটি আর্তনাদ- এরা আমাদের পরিচিতজন নয়, এরা সবাই লুটেরা। এই আর্তনাদের কঠিন জবাব দেয় গ্রামেরই এক অল্পবয়সী ছেলে আজাদ। সে বলে, এই লুটেরাদের দেশছাড়া করব, নয়তো মরব।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে পাক-বাহিনী শহর ছাড়াও ঘাঁটি বাঁধে বাংলার অসংখ্য গ্রাম-গঞ্জে। গণহত্যা, বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া, লুটতরাজ আর অসহায় নারীদের উপর চালায় অকথ্য নির্যাতন। এ বিষয়টি গভীরভাবে নাড়া দেয় বিরামপুরের কিশোর জয়নালকে। সে সুযোগ খোঁজে প্রতিশোধের। একসময় সেই সুযোগ মিলেও যায়। মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়া সেই গ্রামেরই ছেলে জলিল তাকে মাইন পোঁতার জন্য প্রস্তাব দেয়। জয়নাল তীব্র ঘৃণায় হানাদার বাহিনীর আস্তানার কাছে গোপনে মাইন পুঁতে দেয়। দিনের শেষে পাকিস্তানি হানাদারেরা আস্তানায় ফিরলে বিকট শব্দে মাইনটি বিস্ফোরিত হয়। মুক্তির আনন্দে জয়নাল চিৎকার দিয়ে 'জয় বাংলা' ধ্বনি তোলে।
জয়নগর নামে এক প্রত্যন্ত গ্রামে মা-বাবাকে হারিয়ে লাভলী তার বড় ভাই ও ভাবির সাথে বসবাস করে। পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ দেখে প্রাথমিক বিদ্যালয় পাস করলে তার বড় ভাই তাকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। দশম শ্রেণিতে উঠতে না উঠতেই ভাবির এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের যুক্তিতে এক অসম বয়সী বিদেশ ফেরত লোকের সাথে ভাবি তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কোনো উপায় না দেখে একদিন রাতে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু পথিমধ্যে তাজুল আলীর শহরে পড়ুয়া ছেলে তারেক তাকে দেখতে পেয়ে বাধা দেয়। লাভলীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবার কারণে শুনে সে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়াও সে লাভলীকে। পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
পূর্বপুরুষের ভিটায় পাঁচতলা ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য শরীফ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ নেয়। ফ্ল্যাটটি পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগেই তার ঋণের সব টাকা ফুরিয়ে যায়। এমতাবস্থায়, ধনাঢ্য মামাতো ভাইয়ের কাছে সাময়িক আর্থিক সাহায্য চাইতে গেলে তিনি শরীফকে আর্থিক সাহায্যের বিনিময়ে ফ্ল্যাটটির পঞ্চাশ শতাংশ দাবি করেন। মামাতো ভাইয়ের এহেন আচরণে শরীফ হতাশ হয়ে পড়ে।